গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর চট্টগ্রাম বাঁশখালী বন বিভাগ জমিগুলো দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। ২৬ আগস্ট বন বিভাগের কর্মীরা দখলকৃত এলাকায় লাল পতাকা উত্তোলন করে জমি দখলমুক্ত ঘোষণা করেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদের অনুগতরা সেই লাল পতাকা ছিঁড়ে ফেলে জমি দখল অব্যাহত রাখেন। আদালতের রায় অমান্য করে ভূমি দখল অব্যাহত থাকায় বন বিভাগ জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিলেও মিলেনি কোনো প্রতিকার।
বাঁশখালীতে উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের বিপুল পরিমাণ বতৈনভূমি অবৈধভাবে দখলের নায়ক স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের গণহত্যার দায়ে আটক সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমান। যেখানে সৃজিত বন ধ্বংস করে গড়ে তোলা হয়েছে লবণ মাঠ, চিংড়ি ঘের, এমনকি মাছ চাষের জন্য পুকুরও।
বাঁশখালী উপজেলা বন বিভাগের তথ্যমতে, উপকূলীয় বন বিভাগের বাঁশখালী ছনুয়া রেঞ্জের অধীনে খুদুকখালী মৌজায় ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে কয়েক ধাপে ম্যানগ্রোভ বন সৃজন করা হয়। এই ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের প্রায় ২০০ একর জমি স্থানীয় ইউপি তৎকালীন চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে জবর দখল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। থানায় মামলাও হয়েছিল।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ছনুয়া রেঞ্জের খুদুকখালী মৌজার ৯০ একর জমি সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১৯৮৪ সালে বন বিভাগের অধীনে হস্তান্তর করা হয় এবং ১৬ একর জমি রিজার্ভ ফরেস্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেখান থেকে ফ্রেন্ডস ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান ওই মৌজার ৯০ একর জমি নারকেল বাগান করার জন্য ১৯৬৬ সালে ২৫ বছরের ইজারা নেয়। কিন্তু ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে তারা সেখানে লবণ মাঠ ও চিংড়ি ঘের তৈরি করে।
এমন তথ্য জানান চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সালমান পুত্র এস্কর্প হোল্ডিংস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নয় কোটি ২৫ লাখ টাকায় জমিটি ক্রয় দেখান। তবে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর উপকূলীয় বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন জমির মালিকানা ফিরে পেলেও, এখনো তা প্রভাবশালীদের দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এবং আমাদের হাতে হাইকোর্টের রায় রয়েছে, কিন্তু আমরা নিজেরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে পারি না। এই কাজ জেলা প্রশাসনের। তাদের আমরা চিঠি দিয়েছি, কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি।
মন্তব্য করুন